নিজস্ব সংবাদদাতা, কক্সবাজার :::
সারি সারি করে রাখা হয়েছে হরেক প্রজাতির গাছের চারা। মাঝখানে একটি গাছ ব্যতিক্রম। ফল দেখে দূর থেকে পাশাপাশি দুটি গাছ মনে হলেও বাস্তবে ভিন্ন। একই গাছে দু’ ধরণের ফল। এই গাছের নাম ‘ফোরস্টার জাম্বুরা’। নিচে জাম্মুরা আর উপরে তিন ধরণের লেবু সম্মলিত এই গাছটি সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের।
এই দৃশ্য দেখা গেছে সপ্তাহব্যাপী শুরু হওয়া কক্সবাজার শহরের পাবলিক হলের মাঠে আয়োজিত ‘বৃক্ষরোপণ অভিযান, বনজ ও ফলদ মেলায়’। মেলায় এই গাছটি নিয়ে এসেছে মেরিন এগ্রো প্রজেক্ট এন্ড নার্সারি। ওই নার্সারির মালিক মো. সাইফুল হক বলেন, তিন বছর আগে জাম্মুরা গাছের সাথে লেবু গাছের শাখা গ্রাপ্টিং করা হয়। পরে এটার নাম দেওয়া হয় ‘ফোরস্টার জাম্মুরা’। গত এক বছর ধরে এই গাছে ফল ধরা শুরু হয়েছে। নিচে জাম্মুরা ফল আর উপরে ধরে লেবু। এবারই প্রথম এই গাছটি মেলায় আনা হয়েছে। দর্শনার্থীরা বেশ উপভোগ করছে। অনেকে কেনার আগ্রহও দেখাচ্ছে। এই গাছের দাম দেওয়া হয়েছে ১০ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, এবারের মেলায় ৩’শ প্রজাতির ১০ হাজারের বেশি গাছের চারা আনা হয়েছে। এরমধ্যে ফলদ গাছের চারা বেশি। স্বাভাবিকভাবে মানুষের মধ্যে ফলদ গাছের প্রতি আগ্রহ বেশি থাকে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার তিনি বেশি বিক্রি প্রত্যাশা করছেন।
কক্সবাজার বনবিভাগ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে সপ্তাহব্যাপী । এই বৃক্ষমেলা গত শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টায় উদ্বোধন হয়।
মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে দেখা গেছে, অংশ নিয়েছে ৯টি নার্সারি। এগুলো হল, আমেনা নার্সারি, বনফুল নার্সারি, এমরান নার্সারি, রোজ গার্ডেন, কোর্টহিল নার্সারি, ব্র্যাক নার্সারি, মেরিন এগ্রো প্রজেক্ট এন্ড নার্সারি, সাকিব নার্সারি ও সবুজ বন নার্সারি। এসব নার্সারিতে হরেক রকমের গাছের চারা নিয়ে আসা হয়েছে। মেলার শুরুর দিন থেকেই ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরাও ভিড় জমায় গাছের চারা দেখতে।
মেলায় রোজ গার্ডেনের স্টলটি সবচেয়ে বড়। এই নার্সারির মালিক মুফিজুর রহমান। গতবারের মেলায়ও তিনি সেরা বিক্রেতা ও প্রদর্শনীর পুরস্কার জিতে নেন।
তিনি বলেন, অন্যান্য বারের মতো এবারও অনেক আশা নিয়ে মেলায় অংশগ্রহণ করেছি। দুই লাখের বেশি চারা নিয়ে আসা হয়েছে। প্রথম দিন থেকে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের মধ্যে মিষ্টি তেতুল, অস্ট্রেলিয়ান কলি পেয়ারা ও ডেরাকাটা লেবু গাছের চারার প্রতি আগ্রহ বেশি।
বৃক্ষমেলার বিষয়ে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা আলী কবির বলেন, এবারের মেলায় ফলজ গাছের সংখ্যা বেশি। অনেকেই বাড়ির ছাদে ও খালি জায়গায় রোপণ করার জন্য ফলজসহ বিভিন্ন গাছের চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। আগের চেয়ে মানুষ এখন গাছ রোপণের প্রতি বেশি আগ্রহী বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, কক্সবাজারে বনবিভাগের অনেক জমি জবর দখল হয়ে গেছে। এভাবে দিনদিন জবর দখল হতে থাকলে এক সময় শূন্যেরকৌটায় চলে আসবে। এর পরিণাম কিন্তু সবাইকে ভুগতে হবে। তাই বন ও বনভূমি রক্ষায় প্রশাসনের পাশাপাশি জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
পাঠকের মতামত: